Tuesday, December 24, 2024
Google search engine
Homeঅর্থনীতিরেমিট্যান্সে শীর্ষে ৪ জেলা 

রেমিট্যান্সে শীর্ষে ৪ জেলা 

ঢাকা: দেশে রেমিট্যান্সে এগিয়ে রয়েছে চার জেলা। প্রথম স্থানে রয়েছে ঢাকা।এরপর যথাক্রমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট। সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে বান্দরবান, লালমনিরহাট ও রাঙ্গামাটি জেলায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয় সম্পর্কিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা এমন তথ্য মিলেছে। এই তথ্য চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ এই ৯ মাসের।

জুলাই থেকে মার্চ- এই ৯ মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন এক হাজার ৬০৩ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার। ঢাকায় প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৫২২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। চট্টগ্রাম জেলার প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১১৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, কুমিল্লা জেলার প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৯৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার। আর প্রবাসীদের শহর তথা বাংলাদেশের লন্ডনখ্যাত সিলেটের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৮৮ কোটি ৬৫ মার্কিন ডলার।

দেশের সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় পাঠানো তিন জেলা হলো বান্দরবান, লালমনিরহাট ও রাঙ্গামাটি। উত্তরাঞ্চলের একাধিক জেলা ও পার্বত্য দুই জেলার প্রবাসীর সংখ্যা কম। এর প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রেও।

যেসব এলাকার লোকেরা নিজ এলাকা থেকে বাইরে যেতে তুলনামূলক কম পছন্দ করেন বা করতেন এবং বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কম সাহসী, সেসব এলাকার মানুষ প্রবাসে কম গেছেন।  

অন্যদিকে, যেসব এলাকার মানুষের এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই এবং যেসব জেলার লোকেরা আগে থেকেই বিদেশে যান, সেসব জেলা থেকে প্রবাসে যাওয়ার হার বেশি।  

আর এ কারণেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট জেলায় বেশি প্রবাসী আয় আসে বলে মনে করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশনবিষয়ক প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এক কোটিরও বেশি মানুষ দেশের বাইরে আছেন। এর মধ্যে বড় অংশ আছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশেও কাজ করছেন তারা।  

তিনি আরও বলেন, তথ্যে দেখা যায়, দেশের সব জেলা থেকে সমানভাবে মানুষ প্রবাসে যায় না। নির্দিষ্ট ১০ থেকে ১২টি জেলা থেকেই বেশির ভাগ মানুষ প্রবাসে যায়। আবার পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের মানুষ কম যায়।  
শরিফুল হাসান জানান, কুমিল্লা জেলা থেকে এক মাসে যে সংখ্যক মানুষ বিদেশে গেছেন, তা কিছু জেলার গত ৫০ বছরে লোকজনের বিদেশে যাওয়ার সমান। এ কারণে প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রেও এ সব জেলা পিছিয়ে আছে।  

তিনি বলেন, উল্টো তথ্য দেখা যাবে  ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেটের মতো জেলাগুলোতে। তাদের এই প্রবাসে যাওয়া হঠাৎ করে হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে মানুষ বাইরে গেছে; এই বাইরে যাওয়াকে অনুসরণ করে অন্যরা।

তিনি আরও বলেন, যেসব কারণে নির্দিষ্ট জেলাগুলো থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে বিদেশে কম যাচ্ছে, সেসব কারণ চিহ্নিত করে সমাধানে সরকার উদ্যোগও নিয়েছে। কিন্তু এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

প্রবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও যোগাযোগ ভূমিকা রাখছে। যেসব এলাকা তুলনামূলক বেশি উন্নত, শিক্ষার হার বেশি, যোগাযোগ ভালো, সেসব এলাকার মানুষ বেশি সংখ্যক হারে দেশের বাইরে গেছে।  

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ- এই তিন মাসে প্রবাসে গেছেন তিন লাখ ২৩ হাজার ১০ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক কুমিল্লা থেকে। এই জেলা থেকে গেছেন ২৬ হাজার ১৯৬ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৬১৯ জন গেছেন চট্টগ্রাম থেকে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ১৫ হাজার ৯৩৯ জন, টাঙ্গাইল থেকে ১৩ হাজার ৫৫৭ জন, নোয়াখালী থেকে ১১ হাজার ৭৫০ জন  বিদেশে গেছেন।

এই সময়ে সব চেয়ে কম সংখ্যক মানুষ প্রবাসে কাজের সন্ধানে গেছেন রাঙামাটি থেকে। এই জেলা থেকে ২২৭ জন বিদেশে গিয়েছেন। এরপর রয়েছে বান্দরবান ২৪০ জন, লালমনিরহাট ৪৪৪ জন ও খাগড়াছড়ি ‍৪৭৯ জন।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, যেসব এলাকার বেশি সংখ্যক মানুষ দেশের বাইরে গেছেন, সেখানে দারিদ্র্যের হারও কম। দারিদ্র্যের এ হার কমানো বা প্রবাসী আয় বাড়ানোর দুটি বিষয় একটি জায়গা থেকে উদ্ভূত।

এসব এলাকা চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বিদেশমুখীদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করা ও মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করা হচ্ছে। এমনটি দেখানো হয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ-পরিকল্পনায়।  

সম্পূরক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয় খবর

মন্তব্য