আমদানির প্রথম দিন থেকেই হু হু করে কমতে শুরু করে পেঁয়াজের ঝাঁজ। সেই পালে আরও হাওয়া লেগেছে। সরকারের আমদানির অনুমতি দেয়ার দু’দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
আমদানিকারকরা বলছেন, ভারত ও মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম আরও কমবে। সেই সঙ্গে কোবরানির আগ পর্যন্ত আমদানির অনুমতি বহাল রাখারও অনুরোধ করেছেন তারা। এতে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করেন তারা।
গত মাসে দেশি জাতের পেঁয়াজের দাম ৮১ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। তবে, বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। আমদানির অনুমতি পাওয়ার এই খবরে কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দাম।
এরই ধারায়, সোমবার থেকে দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে থাকে। রোববার এখানে পাইকারি দর ৯০-৯৫ টাকা থাকলেও আমদানির সিদ্ধান্তের মধ্যেই কেজি প্রতি বিক্রি শুরু হয় ৫০-৫৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করলে দাম আরও করবে। কম দামের ভারতীয় পেঁয়াজ স্থানীয় বাজারে এলে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। সব খরচ মেটানোর পর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা হবে।
খুচরা ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন, খুচরা বাজারেও কমতে দাম কমতে শুরু করেছে। পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে একদিনেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। সামনে দাম আরও কমবে।
এদিকে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংগঠনগুলো বলছে, পেঁয়াজ আমদানীর খবরে পেঁয়াজের দাম কমানোতে প্রমাণিত হয় এখানে সিন্ডিকেট সক্রিয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান দাবি করেন, আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর পেঁয়াজের দাম কমেছে। এতে বোঝা যায়, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বেশি মুনাফার জন্য কারসাজি করছে।
অন্যদিকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে হিলিতেও কমতে শুরু করেছে দাম। রোববার প্রতি কেজি ৮০ টাকা করে বিক্রি হলেও সোমবার বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। সোমবার বিকেল থেকে হিলি বন্দর দিয়ে শুরু হয় পেঁয়াজ আমদানি। তিনটি ট্রাকে আসে ৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রাকগুলোকে দ্রুত দেয়া হচ্ছে ছাড়পত্র।
দেশে বর্তমানে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ২৫-২৬ লক্ষ মেট্রিক টন। আমদানি করতে হয় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, এ বছর দেশীয় উৎপাদন ছিল প্রায় ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু, মজুত সুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে, দেশে এখনো প্রায় ৬.৫০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে।